একটা সুন্দর সুখস্বাচ্ছন্দপপূর্ণ, পজিটিভ এনার্জিতে ভরপুর ও শাস্ত্রবিধান সম্মত বাড়ি নির্মাণ বা ফ্ল্যাট ক্রয় করার সময় কি কি বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন - তারই একটি জেনারেল গাইডলাইন পাঠকদের সুবিধার্থে সহজ-সরল ভাষায় টিপস আকারে তৈরি করে দেওয়া হল।
জমির গুনাগুন ও তার পারিপার্শ্বিক অবস্থিতি
(১) জমির আকার
ü জমির পরিমাণ যেমনই হোক না কেন তার আকৃতিটি যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
ü বর্গাকার, আয়তাকার [যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ২:১] জমি সর্বোৎকৃষ্ট।
ü বিষমবাহু, ত্রিভুজাকৃতি, ডিম্বাকার জমি বা অনিয়মিত আকৃতির জমি অশুভ।
(২) রাস্তার অবস্থান ও ঢাল
ü বাড়ির চারিদিকে বা তিনদিকে রাস্তা অত্যন্ত শুভ।
ü “T” বা “Y” আকৃতির রাস্তার সংযোগস্থলে বাড়ির নির্মাণ অশুভ।
ü বাড়ির পারিপার্শ্বিক রাস্তার ঢাল যদি উত্তর দিক বা পূর্বদিকে হয়, তবে তা খুব ভালো।
ü এই ঢাল দক্ষিণ, পশ্চিম বা দক্ষিণ-পশ্চিমে হলে তা শুভ নয়।
বাড়ির পারিপার্শ্বিক আবস্তিতি
(৪) সীমানা প্রাচীর
ü বাড়ির চারদিকে সীমানা প্রাচীর থাকবে।
ü তবে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে তা উঁচু করা প্রয়োজন।
(৫) উন্মুক্ত জায়গায় অবস্থান
ü বাড়িই হোক বা বহুতল। উত্তর ও পূর্ব দিকের ছার দক্ষিণ ও পশ্চিমের থেকে বেশি হয় – তা নজর দেওয়া প্রয়োজন।
ü
(৬) বাড়ির উচ্চতা কোনদিকে বেশি
ü বাড়ির উচ্চতা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বেশি রাখা সবথেকে ভালো।
(৭) প্রধান প্রবেশদ্বার
ü বাড়ির প্রধান প্রবেশদ্বার নির্ভর করে তার পারিপার্শ্বিক আবস্থানের ওপর।
ü এক্ষেত্রে ছারটি দিকের প্রতিটি দিককে সমান নয়ভাগে ভাগ করে যে কোনও দিকের বাঁদিক থেকে চতুর্থ ভাগে প্রধান প্রবেশদ্বার প্রয়োজন আনুজায়ী বসানো যেতে পয়ারে।
ü উত্তর ও পূর্বমুখী প্রবেশদ্বার সবথেকে উত্তম।
(৮) সিঁড়ি
ü সিঁড়ি ঘুরবে ক্লক ওয়াইজ – অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার মতো।
ü সিঁড়ির সংখ্যা এমন হবে যাতে ৩ দিয়ে ভাগ করলে 2 অবশিষ্ট থাকে। যেমন ১১,১৭,৪১,৫৬ ইত্যাদি।
(৯) লিফট
ü লিফট বসাতে হবে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে।
(১০) পয়ঃপ্রণালীর ব্যবস্থা
ü বাড়ির ব্যবহৃত জল, বৃষ্টির জল সহ পয়ঃপ্রণালীর জল নির্গমনে স্থান হবে উত্তর, পূর্ব বা উত্তর-পূর্ব দিক।
(১১) জল সরবরাহের ব্যবস্থা
ü পাতকুয়া,নলকূপ,আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভারের আদর্শ জায়গা হল উত্তর, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিক।
ü এক্ষেত্রে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক একদম বর্জনীয়।
(১২) ওভারহেড ট্যাঙ্ক
ü ওভারহেড ট্যাঙ্কের আদর্শ আবস্থান দক্ষিণ-পশ্চিম দিক।
ü উত্তর-পূর্ব দিকে ট্যাঙ্ক রাখবেন না।
(১৩) সেপটিক ট্যাংক
ü বাড়ির উত্তর-পশ্চিম কণে বা উত্তর দিকের মধ্যস্থলে মাটির নিচে সেপটিক ট্যাঙ্ক করা সবচেয়ে ভালো।
ü সম্ভব না হলে মধ্য-পূর্ব ও পূর্বে মাটির নিচে করা যেতে পারে।
(১৪) বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা
ü বাড়ির দক্ষিণ-পূর্বে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য মিটার ঘর তৈরি করুন।
ü বিকল্পে দক্ষিণ বা উত্তর-পশ্চিমে করা যেতে পারে।
ü উত্তর-পূর্ব বা উত্তর দিকে কখনই বিদ্যুৎ সংযোগ বাবস্থা রাখা যাবে না।
(১৫) ছাদ
ü বাড়ির ছাদ অর্থাৎ roof হবে অবতল।
ü সমতল ছাদ হলে তা অপেক্ষাকৃত বেশি গরম হয়ে যায় ও বৃষ্টির জল জমে থাকে।
(১৬) টেরাস
ü বাড়ির উত্তর-পূর্ব বা উত্তর দিক হল টেরাসের আদর্শ স্থান।
(১৭) মেজনাইন ফ্লোর
ü বাড়ির দক্ষিণ দিকে মেজনাইন ফ্লোর বানান।
(১৮) বেসমেণ্ট
ü দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বেসমেণ্ট বর্জনীয়।
ü এক্ষেত্রে উত্তর-পূর্ব দিক হল আদর্শ স্থান।
(১৯) গ্যারেজ
ü বাড়ির গ্যারেজ হওয়া উচিত উত্তর-পশ্চিম বা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে।
(২০) বাগান
ü উত্তর-পশ্চিম দিক হল বাগানের আদর্শ স্থান।
ü বিকল্পে উত্তর-পূর্ব, উত্তর-পূর্বের খালি জায়গায় বাগান করা যেতে পারে।
(২১) ব্রহ্মস্থান
ü জমি বা বাড়ির মধ্যস্থলটিকে বলা হয় ব্রহ্মস্থান - যেখানে বাস্তুদেবতার অবস্থান।
ü সে কারণে এই ব্রহ্মস্থলে বিম, কলাম, পিলার, দেওয়া যেন না থাকে।
ü ঘরের কোনও ভারী আসবাবও এই ব্রহ্মস্থানে রাখা বর্জনীয়।
বিভিন্ন প্রকার ঘরের পারিপার্শ্বিক অবস্থান
(২২)বেডরুম
ü গৃহকর্তার বেডরুম হবে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে।
ü স্বামী-স্ত্রীর বেডরুমও হবে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকেই।
ü বিবাহিত ছেলের বেডরুম হবে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে।
ü কন্যার শোয়ার ঘর হবে উত্তর-পশ্চিম দিকে।
ü বয়স্ক লোক বা বিদ্যার্থীর বেডরুমের আদর্শ স্থান উত্তর-পূর্ব দিক।
(২৩) বেডরুমের দরজার অবস্থান
ü বেডরুমের দরজা উত্তর বা পূর্ব দিকে রাখা উচিত।
ü এই দরজা দক্ষিণ-পূর্ব বা দক্ষিণ-পশ্চিমে রাখা শুভ নয়।
(২৪) বেডরুমের জানালা
ü বেডরুমের জানালা থাকবে উত্তর-পূর্ব, উত্তর বা পূর্ব দিকে।
ü জানালাগুলি এমনভাবে বসাতে হবে যাতে ক্রস ভেন্টিলেশন এর সুবিধা থাকে।
(২৫) শয়নকক্ষে বিছানার অবস্থান
ü গৃহকর্তার শোওয়ার খাট বেডরুমের দক্ষিণ-পশ্চিমের দেয়াল থেকে কমপক্ষে ২-৩ ইঞ্চি দূরে রাখতে হবে।
ü
(২৬) শয়ন পদ্ধতি
ü শোওয়ার সময় দক্ষিণ দিকে মাথা ও উত্তর দিকে পা রেখে শোওয়া উচিৎ।
(২৭) বেডরুমের ওয়ারড্রব / আলমারির অবস্থান
ü প্রধান আলমারি ঘরের দক্ষিণ-পশ্চিম খাটের পাশে রাখতে হবে।
ü আলমারির মুখ থাকবে উত্তর দিকে।
ü টাকা পয়সা, দরকারি কাগজপত্রাদি এই আলমারিতেই থাকবে।
ü
(২৮) ড্রইংরুম
ü বাড়ি বা ফ্ল্যাটের পূর্ব বা উত্তর পশ্চিমের ঘরটি ড্রইংরুম বা বসার ঘরে হিসাবে ব্যবহার করা উচিত।
ü দক্ষিণ দিক ঘেষে এই ধরনের ঘর করা উচিত নয়।
(২৯) শৌচাগার ও বাথরুম
ü শৌচাগারের অবস্থান যেকোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ü অধিকাংশ বাস্তুদোষের মূলে রয়েছে শৌচাগারের অসামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থান।
ü শৌচাগারের অবস্থান হবে পশ্চিম, দক্ষিণ ও উত্তর-পশ্চিম দিকে।
ü উত্তর-পূর্ব দিক বা ইশান কোনে কোনমতেই শৌচাগার নির্মাণ করা যাবে না।
ü শৌচাগারে কমোড বা প্যান উত্তর – দক্ষিণ বরাবর বসাতে হবে।
(৩০) রান্নাঘর
ü অগ্নিকোণ অর্থাৎ দক্ষিণ – পূর্ব দিক হল রান্নাঘরের জন্য আদর্শ।
ü এই দিকে সম্ভব না হলে উত্তর-পশ্চিম দিকে করা যেতে পারে।
ü কিন্তু কোনওভাবেই ঈশানকোণে বা উত্তর-পূর্ব দিকে তা রাখা উচিত নয়।
ü রান্না করার প্ল্যাটফর্ম টেবিল টা এমনভাবে বানাতে হবে যাতে রান্না করার সময় রাধুনীর মুখ থেকে পূর্ব দিকে।
ü রান্নাঘরের কল,ফিল্টার ও জল সম্বন্ধীয় যে কোনও বস্তুর অবস্থান হবে উত্তর-পূর্বদিকে।
(৩১) ডাইনিং রুম
ü রান্নাঘরের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে ডাইনিং রুমের প্লেসমেন্ট হওয়া বাঞ্ছনীয়।
ü বাড়ির বা ফ্ল্যাটের পূর্ব বা পশ্চিম দিকের ঘরটি ডাইনিং রুম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
(৩২) ঠাকুরঘর
ü ঈশানকোণ অর্থাৎ উত্তর-পূর্ব কর্নারে ঠাকুরঘর বা ঠাকুরের সিংহাসন রাখুন।
ü উত্তরমুখে বা পূর্বমুখে বসে যাতে পূজা করা যায় - সেভাবেই দেবদেবীর মূর্তি স্থাপন করুন।
ü বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ব্রহ্মস্থানে ঠাকুরঘর বানাতে পারেন।
ü
(৩৩) স্টাডিরুম
ü উত্তর-পূর্ব কোণে ঠাকুর ঘরের আশেপাশে স্টাডিরুম করা সবচেয়ে ভালো।
ü সম্ভব না হলে উত্তর-পশ্চিমেও তা করা যেতে পারে।
ü পড়াশোনা করার সময় এমনভাবে বসতে হবে যাতে পূর্ব দিকে মুখ থাকে।
(৩৪) স্টোররুম বা ভাঁড়ারঘর
ü রান্নাঘরের উত্তর-পশ্চিমে স্টোররুম বা ভাঁড়ারঘর করা বাঞ্ছনীয়।
(৩৫) গেস্টরুম
ü বাড়িতে কোনও অতিথি এলে বা থাকলে তাঁদের জন্য উত্তর-পশ্চিম বা দক্ষিণ দিকে একটি গেস্টরুম বা অতিথি নিবাস রাখা যেতে পারে।
(৩৬) ব্যালকনি/ঝুল বারান্দা
ü উত্তর-পূর্ব দিক হল ব্যালকনি বারান্দার আদর্শস্থান।
(৩৭) গৃহপালিত পশু পাখিদের থাকার স্থান
ü কুকুর,বেড়াল,পাখি,খরগোশ প্রভৃতি গৃহপালিত পশুপাখির বাড়ি বা ফ্ল্যাটের উত্তর-পশ্চিম কোনটি বরাদ্দ রাখুন।
(৩৮) সার্ভেন্টস রুম
ü বাড়ির কাজের লোকেদের থাকার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম কোনটি বরাদ্দ রাখবেন।
(৩৯) জুতো রাখার স্থান
ü বাড়ির দক্ষিণ বা পশ্চিম দিকের ঘরটির দক্ষিণ বা দক্ষিণ - পূর্ব দিকের কর্ণারে জুতো রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
(৪০) আবর্জনা/ডাস্টবিনের স্থান
ü ময়লা আবর্জনা কখন বাড়িতে দেবেন না। ময়লা আবর্জনার ডাস্টবিনটি রাখুন বাড়ির দক্ষিণ দিকে।
ü সম্ভব না হলে উত্তর-পশ্চিম দিকে রাখা যেতে পারে।
ü কিন্তু কোনমতেই বাড়ির ব্রহ্মস্থান ও উত্তর-পূর্বদিকে আবর্জনা ডাস্টবিন রাখবেন না।
যদি বাস্তু দোষ থাকে
অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় শুধুমাত্র একটু সচেতনতার অভাবে [ব্যতিক্রম দক্ষিণ ভারত] বাড়ি ফ্ল্যাট নির্মাণের সময় উপরিউক্ত বাস্তুশাস্ত্র বিধান না মানার ফলে বসবাসকালীন অবস্থায় সংশ্লিষ্ট বাড়ি বা ফ্ল্যাটটিতে বাস্তুদোষজনিত বিভিন্ন সঙ্কট ক্রমশ প্রকট হতে হতে অবশেষে দীর্ঘ স্থায়ী সমস্যার রূপ ধারণ করে। যাইহোক বাস্তুদোষ আদৌ আছে কিনা তা বোঝার জন্য নিম্নলিখিত লক্ষণগুলির ওপর পাটক একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন –
ü গৃহকর্তাসহ পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের অসুখ বিসুখ লেগেই রয়েছে।
ü দাম্পত্য কলহ পারিবারিক কলহ।
ü যে কোনোও শুভকাজ দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে।
ü অকারণে পুত্র বা কন্যার বিবাহ হচ্ছে না।
ü মামলা-মোকদ্দমা, পুলিশি ঝামেলা,গুপ্ত শত্রুতা,আশান্তি।
ü সন্তানের পড়াশোনার ফলাফল দিন দিন খারাপ হচ্ছে।
ü জলের মতো আর্থ বেরিয়ে যাচ্ছে।
Hey, I had read this blog and I think you know very well about the Demat Account. You provied very good and intersting facts about demat account, but I think you miss some more information about opening of New Demat Account in 2021. I was read about this topic on Zero Hour Info news category blogs.
ReplyDeleteNew Demat Account in 2021
Hey, I was read your blog it very helps full and filled with lots of information. I was read your blog and with this blog, I got to know how much important is SEO writing. I was also read another blog it will also helpful for Freelance Content Creator in Delhi.
ReplyDeleteFreelance Content Creator in Delhi