Powered by Blogger.

Wednesday, December 4, 2019

হোম লোন (Home Loan) বা গৃহঋণ কি এবং নেওয়ার আগে কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখা প্রয়োজন? জেনে নিন

2 comments
Home-Loan-Documents-eligibility
Home-Loan-Documents-eligibility

হোম লোন বা গৃহঋণ কি এবং নেওয়ার আগে কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখা প্রয়োজন? জেনে নিন


নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাটের যা দাম, তাতে হোম লোন বা গৃহঋণ নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না সাধারণ মানুষের ৷ এখন তো ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনার জন্য ঋণের ডালি সাজিয়ে বসে আছে ব্যাঙ্ক এবং গৃহঋণ সংস্থাগুলি। ফলে শুধু ডাউনপেমেন্টের টাকাটা জোগাড় করতে পারলেই হল। বাকিটা মিটিয়ে দেওয়া যাচ্ছে মাসিক কিস্তিতে। ফলে বাড়ি কেনাও আর এখন কঠিন কাজের মধ্যে পড়ছে না ৷
যেসব ভারতীয় নাগরিক আয়কর প্রদান করেন তাঁরাই ঋণ পাওয়ার যোগ্য। সে আপনি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করুন বা সরকারি সংস্থায়। যাঁরা স্বনিযুক্ত, অর্থাৎ ডাক্তার,অডিটর,সারভেয়ার ,প্লানার বা আর্কিটেক্ট  যাই হন , তারাও গৃহঋণ পেতে পারেন। ছোট বা বড় ব্যবসায়ীরাও ঋণ পাওয়ার যোগ্য। তবে হ্যাঁ প্রত্যেকেই পরপর দু'বছর  আয়কর দিয়ে থাকতে হবে। আপনার বার্ষিক আয় কত তার উপর নির্ভর করবে আপনি কত টাকা গৃহঋণ পাবেন। তারও অবশ্যই একটি হিসেবে  আছে। সে কথায় পরে আসছি।

ঋণ পাওয়ার জন্য কি কি প্রমান পত্র ও শংসাপত্র লাগবে ?


(১) আয়ের প্রমাণ

ü  চাকুরিজীবীদের জন্য পরপর দু বছরের ফর্ম ১৬।
ü  শেষ তিন মাসের স্যালারি স্লিপ।
ü  শেষ দু বছরের আয়কর রিটার্নের নথি লাগবে।
ü  তার সঙ্গে অবশ্যই প্যান কার্ড।
ü  আর লাগবে চাকরির অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার।
ü  ব্যবসায়ী কিংবা স্বনিযুক্ত হলে লাগবে শেষ তিন বছরের আয়কর রিটার্ন ও কম্পুটেশন শিট। তার সঙ্গে প্যান কার্ড।

(২) নাগরিকত্বের প্রমাণ

নাগরিকত্বের প্রমাণ স্বরূপ ভোটার আইডি কার্ড অথবা আধার কার্ড কিংবা পাসপোর্ট। ভোটার আইডি কার্ড কিংবা পাসপোর্ট বা আধার কার্ডে দেওয়া ঠিকানায় সঙ্গে যদি আপনার বর্তমান বাসস্থানের ঠিকানা মিল না থাকে তবে ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে অন্য কোনো নথি লাগবে যেমন রেশন কার্ড কিংবা ঠিকানা দেওয়া ব্যাংকের পাস বই, বিদ্যুৎ ,গ্যাস বা টেলিফোনের বিল ইত্যাদি।

(৩) সম্পত্তি সংক্রান্ত প্রমাণপত্র

ü  যে সম্পত্তিটি(বাড়ি বা ফ্ল্যাট) আপনি কিনতে চলেছেন তারও দলিল-দস্তাবেজ আপনাকে ব্যাংকে জমা দিতে হবে। যেগুলি হল
ü  মূল দলিলের কপি।
ü  মিউটেশন সার্টিফিকেটের কপি।
ü  কর দেওয়ার প্রমাণস্বরূপ রিসিট।
ü  মিউনিসিপ্যালিটি বা পঞ্চায়েতের পাস করা বিল্ডিং প্ল্যান।
ü  ক্রয় চুক্তির মূল দলিল ।
আপনি চাইলেই প্রোমোটার বা বাড়ির মালিক আপনাকে এই প্রমানপত্রগুলির একটি করে কপি দিয়ে দেবে। তবে ঋণ নিতে গেলে আগে আপনাকে কিছু টাকা অগ্রিম দিয়ে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বুক করতে হবে। সেই বুকিং এর মূল রিসিটটি আপনাকে ব্যাংকে দিতে হবে (ক্রয় চুক্তির মূল দলিল)।
তবে, যে ফ্ল্যাটটি আপনি কিনতে চলেছেন সেটি যদি , যে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চলেছেন তার দ্বারা আগে থেকেই সাংশনড হয়ে থাকে তবে আপনাকে কষ্ট করে এত কাগজপত্র বয়ে নিয়ে যেতে হবে না। তখন অগ্রিম দেওয়ার রিসিট বা প্রোমোটারের একটি কাগজেই যথেষ্ট।

কত টাকা ঋণ পাবেন?


এই বিষয়টা নিয়ে নিষ্পত্তি হবে আপনি বার্ষিক কত টাকা আয় করেন তার উপর। তবে ব্যাপারটার মধ্যে আরেকটু জটিলতা আছে। একইসঙ্গে দেখা হবে যে ফ্ল্যাট বা বাড়িটি আপনি কিনতে চলেছেন তার বাজারদর কত। এটি ব্যাঙ্কই নিজেদের ভ্যালুয়াটার দিয়ে হিসেব করে নেবে।
এবার আসা যাক বার্ষিক আয়ের ওপর নির্ভর করে কিভাবে ব্যাংক ঋণের পরিমাণ স্থির করে সেই প্রসঙ্গে। ব্যাংক প্রথমেই দেখবে আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ চাইছেন তা পরিশোধ করার মত আয় আপনার হয় কি না। আপনার পরিবারের সদস্য সংখ্যা কত তা বিচার করে সংসার চালানোর জন্য আপনার ন্যূনতম কত টাকা প্রয়োজন তা খতিয়ে দেখবে। সেই পরিমাণ টাকা আপনার আয় থেকে বাদ দিয়ে বাকি টাকায় মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করলে কত টাকা আপনি নির্দিষ্ট বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে পারবেন তা হিসাব করে সেই পরিমাণ টাকা আপনাকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে। এটি হিসাব করার একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে।যাকে পরিভাষায় বলে (ই এম আই) এন (এম আই) আনুপাত । সাধারনত ব্যাঙ্কের হিসেবে, বার্ষিক আয়ের পরিমাণ এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা বা তার কম হলে এই অনুপাত রাখা হয় কুড়ি শতাংশ। এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা থেকে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় হলে এই অনুপাত তিরিশ শতাংশ। তিন থেকে ছয় লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয় যাদের, তাদের ক্ষেত্রে পঞ্চাশ শতাংশ। ছয় থেকে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় হলে এই অনুপাত দাঁড়ায় ষাট শতাংশ আর দশ লক্ষ টাকার উপরে আয় হলে সত্তর শতাংশ পর্যন্ত এই অনুপাত রাখা হয়। উদাহরণ দিয়ে বলা যাক, আপনার বার্ষিক আয় যদি তিন লক্ষ টাকা থেকে ছয় লক্ষ টাকার মধ্যে হয় তবে আপনার মাসিক কিস্তির টাকা আপনার মাসিক আয়ের অর্ধেক পর্যন্ত কাটবে বাঙ্ক । অর্থাৎ আপনার মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা হলে আপনি মাসে ১৫ হাজার টাকা ই এম আই দেওয়ার যোগ্য বলে ধরে নেবে ব্যাংক। আপনার ঋণের পরিমাণ স্থির হবে এই ই এম আই হিসাব করেই । অর্থাৎ অনেকটা ব্যাক ক্যাল্কুলেশন এর মত।
তবে ঋণদাতা সংস্থা কখনই বাড়ির পুরো দাম ঋণ হিসেবে দেয় না। বাড়ির মূল্যের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সাধারণত দেওয়া হয়। ব্যাঙ্ক বা ঋণসংস্থা ভেদে এই পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়।বাড়ি বা ফ্ল্যাট রেডি থাকলে ঋণের পরিমাণ একটু বেশিই হয়।
বাড়ি বা ফ্ল্যাটের দাম ২০ লক্ষ টাকার মধ্যে হলে দামের ৯০% ঋণ হিসেবে দিতে পারে। ২০ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে দামের 80% ও ৭৫ লক্ষ টাকার  উপরে হলে ৭৫% ঋণ হিসেবে দিতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, প্রোমোটার বা মালিক আপনার কাছে যে দামই নিক না কেন,
ব্যাঙ্ক বা ঋণসংস্থার ভ্যালুয়াটার যে দাম স্থির করবেন তার উপরই এই হিসাব হবে। তবে ইদানীং ওই দুই দামের মধ্যে যেটি কম সেটাকেই ন্যায্য দাম হিসেবে ধরা হচ্ছে। তারপর হিসেব করা হয় আপনার পক্ষে কতটা ঋণ শোধ করা সম্ভব, যে বিষয়টি আগেই আলোচনা করা হয়েছে। তারপর দেখা হয় আপনি কত টাকা ঋণ নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেনএই দুয়ের মধ্যে যেটি কম হয়, সেই পরিমাণ টাকা ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়।

সুদের হার ও সুদ


সুদের হার প্রায়শই পরিবর্তিত হয়। দেশের অর্থনীতি ,সরকারের সিদ্ধান্ত ইত্যাদি নানা বিষয়ের উপর নির্ভর করে সুদের হার। ব্যাঙ্ক ও সংস্থা ভেদেও সুদের হার আলাদা আলাদা হয়। তাই ঋণের জন্য ব্যাঙ্কে বা গৃহঋণসংস্থার কাছে আবেদন করার আগে সব ব্যাঙ্কের বা গৃহঋণসংস্থার অফারগুলি জেনে নিন ৷ তারপর যেটা সবচেয়ে ঠিক লাগে, সেখান থেকেই গৃহঋণ নিন ৷ কোনও ব্যাঙ্ক বা NBFC থেকে হোম লোন নেওয়ার পর যদি দেখেন আপনার থেকে অতিরিক্ত সুদ নেওয়া হচ্ছে, তাহলে আপনি অন্য ব্যাঙ্কে আপনার লোন ট্রান্সফার করতে পারেন ৷ তবে এক ব্যাঙ্ক থেকে আরেক ব্যাঙ্কে লোন ট্রান্সফারের আগে, সেই ব্যাঙ্কের প্রসেসিং ফি, সুদের পরিমাণ এবং অন্যান্য শর্তাবলী ভাল করে জেনে নিন ৷

হোম লোন নেওয়ার আগে বিশেষ বিশেষ কিছু বিষয় মনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন


(১) একটি সুবিধা চালু আছে।সেটি হল আপনার হাতে হঠাৎ কিছু টাকা এসে গেলে আপনি মাসিক কিস্তির বাইরেও অতিরিক্ত পরিমাণ টাকা শোধ করে দিতে পারেন। তার জন্য কোনও চার্জ বা ফাইন লাগবে না।আর মাসিক কিস্তি পরিশোধ করার পর যে টাকা পড়ে থাকবে তার উপরেই সুদ ধার্য করা হয়। ব্যাঙ্ক ও সংস্থা ভেদে এই সুযোগ সুবিধার তারতম্য হয়।
(২) ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে একজনের বদলে দুই-তিনজন মিলেও ঋণের জন্য আবেদন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ক্রয় করা সম্পত্তির মালিকানা যে তিনজনেরই নামে হবে তার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু মালিকানা তিনজনের নামের না হলেও যদি এই সম্পত্তি কখনও বিক্রি করার প্রসঙ্গ ওঠে তবে তিনজনেরই সম্মতির প্রয়োজন হবে। ঋণের আবেদন জোরদার করতে আরও একজনকে সঙ্গে নিয়ে ঋণের আবেদন করুন অর্থাৎ Co-Applicant হিসেবে আবেদন করুন। এর সুবিধা হল লোনের এলিজিবিলিটির দায় শুধু একা আপনার ঘাড়েই থাকে না, আপনার এবং আপনার সহ-আবেদনকারী, দুজনেরই ক্রেডিট স্কোর নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।
(৩) অসম্পূর্ণ ফ্ল্যাট বাড়ির জন্য ঋণ নেওয়া হলে যতদিন না ঋণগ্রহীতা সেই বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিকানা (পজেসন)   পাচ্ছন ততদিন ই এম আই কাটা হয় না।
(৪) অনেক সময় বলা হয় ব্যাঙ্ক বা গৃহঋণসংস্থার থেকে হোমলোন বা গৃহঋণ নিতে গেলে তারা একটি লইফ ইনসরেঞ্চ পলিসি করা বাধ্যতামূলক বলে, একথা ঠিক নয়। পলিসি কখনোই বাধ্যতামূলক নয়। তবে হ্যাঁ একটি লইফ ইনসরেঞ্চ পলিসি বা ক্রেডিট শিল্ড করা থাকলে ঋণগ্রহীতার পরবর্তীকালে সুবিধাই হয়। মনে রাখবেন আপনি যদি আগে কখনো কোনো ব্যাংক বা আর্থিক সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে তা ফেরত না দিয়ে থাকেন বা অন্য কোনো অসঙ্গতি থাকে তবে নতুন করে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা দিতে পারে ব্যাংক ও আর্থিক সংস্থা গুলি সিবিল নামক ওয়েবসাইট থেকে সব তথ্য পেয়ে যায়।
(৫) গৃহঋণ নেওয়ার আগে হোমওয়ার্কটা ভালমতো সেরে নিন ৷ আপনি যে এলাকায় বাড়ি কিনছেন, সেখানে কোন ব্যাঙ্ক গৃহ ঋণ দেয় সেটা জেনে নিন ৷ কারণ গৃহ ঋণ নেওয়ার জন্য আপনার কাছে আরও অনেক বিকল্প রয়েছে ৷ অন্য কোনও সংস্থার বদলে কোনও ব্যাঙ্কের কাছ থেকে গৃহঋণ নেওয়াই বেশি ভাল ৷ একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন, ব্যাঙ্কের সুদের হার যে কোন NBFC বা নন বাঙ্কিং ফাইনান্স কোম্পানির থেকে কম হয়।
(৬) ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট বা বাড়ি কিনলে, শর্তসাপেক্ষে বাৎসরিক ধার শোধ বাবদ ছাড় পাওয়া যায় ৮০-সি ধারায়। আসল (প্রিন্সিপাল) শোধের জন্য বছরে সর্বাধিক এক লক্ষ টাকা ছাড় পেতে পারেন আপনি। জীবনবিমা, পিএফ, পিপিএফ ইত্যাদি মিলিয়ে যে-একলক্ষ টাকা ছাড় মেলে, তার মধ্যে গৃহঋণের আসলকেও ধরা হয়।করছাড়ের সুবিধা মেলে সুদ শোধের ক্ষেত্রেও। ধারা-২৪ অনুযায়ী সুদ বাবদ বছরে সর্বাধিক ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড়ের সুবিধা মিলতে পারে। তবে খেয়াল রাখবেন, আসল কিংবা সুদ, উভয় ক্ষেত্রেই করছাড়ের সুবিধা পেতে কিছু শর্তপূরণ করতে হয়। তাই গৃহঋণ নিলে, সেই
শর্তাবলি অবশ্যই খুঁটিয়ে দেখে নেবেন।

2 comments:

  1. Hey, I had read this blog and I think you know very well about the Demat Account. You provied very good and intersting facts about demat account, but I think you miss some more information about opening of New Demat Account in 2021. I was read about this topic on Zero Hour Info news category blogs.
    New Demat Account in 2021

    ReplyDelete
  2. Hey, I was read your blog it very helps full and filled with lots of information. I was read your blog and with this blog, I got to know how much important is SEO writing. I was also read another blog it will also helpful for Freelance Content Creator in Delhi.
    Freelance Content Creator in Delhi

    ReplyDelete